খেলাধূলার শরয়ী বিধান । Shariah provisions of sports

প্রতীকী ছবি
#খেলাধূলা ও কৌতুকাবহ বস্তুর বর্ণিত সংজ্ঞার ভেতরে যত কাজ, যত কথা, বস্তু ও বিষয় ঢুকবে সবগুলোকে শরিয়ত অনুমোদন দেয়নি।

#আল্লাহ বলেন- মানুষের মধ্যে এক শ্রেণীর মানুষ এমন আছে যারা 'লাহওয়াল হাদীস' তথা খেলাধূলা কৌতুকাবহ বিষয়াদি ক্রয় করে মানুষকে আল্লাহর পথ পদ্ধতি থেকে ভ্রষ্ট করার জন্য। আর এটা নিয়ে ঠাট্রা বিদ্রুপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবনামনাকর শাস্তি”। (সূরা লুকমান- আয়াত:৬)

#প্রথম লক্ষণীয় বিষয় এই যে- কোরআন পাক কেবল নিন্দার স্থলেই খেলাধূলা, ক্রিড়া-কৌতুকের উল্লেখ করেছে। এই নিন্দার সর্বনিম্ন পর্যায় হচ্ছে মাকরুহ, আলোচ্য আয়াতটি খেলাধূলা ও অনর্থক কাজের নিন্দায় সুম্পষ্ট ও প্রকাশ্য। (রূহুল মাআনী, কাশশাফ)

#বিংশ শতাব্দির প্রখ্যাত মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ শফী র. স্বীয়গ্রন্থ আহকামুল কুরআনে বর্ণিত আয়াতের হুকুম প্রসঙ্গে বলেন- পবিত্র কুরআনের এ আয়াতে ঐ সকল কথা, কাজ, বস্তু ও বিষয়কে হারাম করে যা মানুষকে আল্লাহ পাকের এবাদত ও তার স্মরণ থেকে গাফিল করে দেয়। তা গান-বাজনা হোক বা খেলাধূলা, ক্রীড়া-কৌতুক, মেলা, জুয়া সরঞ্জামসহ সবই এর অন্তর্ভূক্ত।

#বর্ণিত আয়াতে অধিকাংশ তাফসীরের কিতাবে “লাহওয়াল হাদীস” এর ব্যাখ্যায় খেলাধূলা-ক্রীড়া-কৌতুক, আজে-বাজে কথাবার্তা, ছায়াছবি-নাটক, অশ্লীল উপন্যাস, কেচ্ছা-কাহিনী, গান-বাজনা ইত্যাদি যা মানুষকে আল্লাহর এবাদত ও স্মরণ থেকে গাফেল করে তা হারাম সাবস্ত করেছেন।

#বিশ্ববিখ্যাত ফেকাহ শাস্ত্রীয় কিতাব ‘হেদায়া’র মধ্যে বলা হয়েছে- দাবা, চৌদ্দ গুটির খেলা এবং প্রত্যেক খেলা মাকরুহে তাহরীমী, কারণ এর দ্বারা জুয়া খেলা খেললে তা হবে মাইসির৷ আর কুরআনে মাইসিরকে অকাট্য হারাম বলা হয়েছে।

#যে কোন জুয়া খেলাকে মাইসির বলা হয়, আর যদি এর দ্বারা জুয়া না খেলে তাহলে এটা হবে নিরর্থক এক কাজ। আর নিরর্থক কাজ করা থেকে হাদীসে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

#পৃথিবীর বিখ্যাত ফতোয়ার কিতাব 'দুররে মুখতার' গ্রন্থকার বলেছেন - যে কোন খেলাধূলা বৈধ হওয়ার জন্য পূর্বশর্ত হচ্ছে- তাতে হার জিতের ওপর কোন বাজী ধরা যাবে না। জুয়ার চুক্তি করা যাবেনা। খেলার অধ্যবসায় সদা-সর্বদা করা যাবেনা। জীবনের আদর্শ উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট হিসেবে একে আজীবনের জন্য গ্রহণ করা যাবেনা। খেলাধূলার কারণে ইসলামের অনুশাসন বাস্তাবায়নে কোন প্রকার বাধা সৃষ্টি হতে পারবে না।

#যেকোনো খেলার ব্যাপারে ফতোয়ায়ে শামী গ্রন্থকার বলেন- খেলাধূলা, মেলা, অনর্থক, লাভহীন কথাবার্তা, কর্মকান্ড এবং এসব বস্তু তৃপ্তি সহকারে দেখা বা শুনা যেমন নৃত্য, উপহাস, করতালী, বীণার সুুুুরেলা ধ্বনি, সঙ্গীতের সুরালাপ, হারমোনি, তবলা, বড়ঢোল প্রভৃতি বিষয় হারাম।

#মৌলিক নীতি : ফতোয়ায়ে দুররে মুখতারে খেলাধূলার একটি মূলনীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা হলো-
খেলাধূলা তখন জায়েজ হবে যখন তাতে জুয়া থাকবেনা। খেলার অধ্যবসায় সদা-সর্বদা করা যাবেনা। এটাকে জীবনের উদ্দেশ্য, আদর্শ ও বৈশিষ্ট্য মনে করা যাবেনা। সেই সাথে খেলাধূলার কারণে ইসলাম ধর্মের অনিবার্য বিধান লংঙ্ঘিত হতে পারবে না। অন্যথায় তা হারাম হওয়ার ব্যপারে ফকীহগণ একমত।
সংগ্রহীত, সংশোধিত, সংযোজিত ও পরিমার্জিত
লেখকঃ মুফতি নুরউদ্দীন নুরী
©Friends Radio

No comments

Powered by Blogger.